ডায়াবেটিস কত প্রকার, এর লক্ষণ এবং ডায়াবেটিস সারানোর উপায় কোনপ্রকারওষুধ ছাড়াই
ডায়াবেটিস কত প্রকার, এর লক্ষণ এবং ডায়াবেটিস সারানোর উপায় কোনপ্রকারওষুধ ছাড়াই
সাধারণভাবে বলা যায় ডায়াবেটিস রোগ হলো অনিয়ন্ত্রিত খাবার-দাবার গ্রহণ এবং জীবনযাপনের ফলে শরীরে জেগে ওঠা একটি শারীরিক সমস্যা যা মূলত মানুষের ফোর্স দুর্বল হয়ে পড়লে আরো তীব্র ভাবে প্রকাশ পায়। দৈনন্দিন খাবার দাবার যেভাবে গ্রহণ করলে মানুষের শরীর সঠিকভাবে পুষ্টি পায় সেগুলি সেভাবে গ্রহণ না করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বা প্রসেস করে গ্রহণ করার ফলে মানুষের শরীর সেভাবে পুষ্টি পায় না। তাছাড়া প্রসেস করার ফলে খাবারে নানা প্রকার ক্ষতিকর উপাদান যেমন যুক্ত হয় তেমনি পুষ্টিগুণও বহুলাংশে কমে যায়। আর সেগুলি বাচবিচার না করে ক্রমাগত গ্রহণের ফলে এবং বিভিন্ন ওষুধ গ্রহণের ফলে আমাদের ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে পড়ে তখন ডায়াবেটিসের মতো জটিল স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি জেগে ওঠে।
ভাইটাল ফোর্স যে যে কারণে দুর্বল হতে পারে সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল
বিভিন্ন প্রকার ভ্যাকসিন বা টিকা
হাই-পাওয়ারে ক্ষতিকর সব এন্টিবায়োটিক
ক্রমাগত বিভিন্ন প্রকার এলোপ্যাথিক ওষুধ গ্রহণ
বড় ধরনের শারীরিক আঘাত
বড় ধরনের মানসিক আঘাত
এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বাস্থ্যবিধির অনুসরণ না করা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করা ইত্যাদি
মানুষের শরীরে অনেক দুরারোগ্য রোগের জন্য দায়ী রয়েছে ডায়াবেটিস যেমন - হৃদরোগ, স্ট্রোক বা কিডনির সমস্যায় ইত্যাদি। ডায়াবেটিস হলে কোন ব্যক্তি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে না মেনে শুধুমাত্র ওষুধের ওপর নির্ভর করে থাকেন এবং শুধুমাত্র ওষুধ খেয়ে যান তাহলে পরে আরো অনেক দুরারোগ্য রোগ হতে পারে।
ডায়াবেটিস হলে শরীরের যা যা ঘটেছ তা নিম্নে আলোচনা করা হল
খাবার খাওয়ার পর শরীর খাবারের শর্করাকে ভেঙে সুগার বা চিনিতে রূপান্তর করে। ইনসুলিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয় অগ্নাশয় থেকে যে হরমোন সুগার বা চিনি কে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে থাকে শরীরের কোষগুলোকে। শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হতে পারেনা এবং ঠিকমত কাজ করেনা তখনই মূলত ডায়াবেটিস হয়। এর ফলে রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে শুরু করে।
ব্লাড সুগার লেভেল অনুসারে ডায়াবেটিস নির্ণয়
ডায়াবেটিস শনাক্ত করার জন্য সবচেয়ে সঠিক ও বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হলো OGTT-Oral Glucose Test. এই পদ্ধতিতে রোগীকে সকালে খালি পেটে একবার রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হয় তারপর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ শরবত পানের দুই ঘন্টা পর আরেকবার রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা হয়। এই পদ্ধতিতে নির্ভুলভাবে ডায়াবেটিস ও প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায়।
মেডিক্যালের ভাষায় ডায়াবেটিসের টাইপ
প্রি-ডায়াবেটিস
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস
টাইপ টু ডায়াবেটিস
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
প্রি-ডায়াবেটিস
প্রি-ডায়াবেটিস অবস্থাটি হলো সেই অবস্থা যখন রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় কিন্তু ততটাও বাড়ে না যাকে পুরোপুরি ডায়াবেটিস বলা যায়। যদিও শর্করার এই মাত্রাটির ফলেও আক্রান্তের শরীরের বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। প্রি-ডায়াবেটিস অবস্থাটি যদি চিকিৎসার না করানো হয় তাহলে অচিরেই এই অবস্থাটি টাইপ টু ডায়াবেটিস উত্তীর্ণ হয়।
প্রি-ডায়াবেটিস অবস্থার কিছু অতি সাধারণ লক্ষণ
অত্যাধিক খিদে পাওয়া
অত্যাধিক তৃষ্ণা
ওজন বেড়ে যাওয়া
ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ
ঝাপসা দৃষ্টি
টাইপ টু ডায়াবেটিস
এই ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অগ্নাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিকমত কাজ করেনা। বংশগতি এবং কিছু পরিবেশগত শর্ত যেমন স্থূলতা ও সক্রিয়তা অভাব অর্থাৎ দৈনন্দিন স্বাস্থ্যবিধি পালন না করে জীবন যাপন করার ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে উঠতে পারে।
এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত ৪০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা দেয় যদিও এটা ৪০ বছর বয়সের আগেও হতে পারে।
টাইপ টু ডায়াবেটিসের লক্ষণ ধীরে ধীরে বাড়ে। এমনও হতে পারে বছরের পর বছর ধরে এই রোগে আক্রান্ত হয়েও অনেকে বুঝতে পারে না যে তার এই রোগ হয়েছে।
টাইপ টু ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলি হল
পিপাসা তীব্রভাবে বেড়ে যায়
বারবার প্রস্রাব করা
ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করা
ক্ষত সারতে সময় লাগে
বারবার ত্বকে সংক্রমণ হওয়া
দৃষ্টিশক্তিতে অস্বচ্ছতা
হাত অথবা পায়ে অসাড়তা
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
গর্ভাবস্থায় যখন কোন মায়ের সুগার লেভেল বেশি থাকে তাকে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে ইনসুলিন এর কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। এই ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে ডায়াবেটিস নির্ণয় ও চিকিৎসা।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
রক্তে চিনির পরিমাণ বেশি হলে রক্তনালীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে
শরীরে যদি রক্ত ঠিকমতো প্রবাহিত হতে না পারে ,যেসব জায়গায় রক্তের প্রয়োজন সেখানে যদি এই রক্ত পৌঁছাতে না পারে, তখন স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়
এর ফলে মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে
পায়ে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে অন্ধত্ব, কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়া, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদি পেছনে একটি বড় কারণ ডায়াবেটিস
যেসব কারণে রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে সেই গুলি নিম্নে দেওয়া হল
সাধারণ সর্দি, ফ্লু বা অন্যান্য কোন ভাইরাস যেমন করোনাভাইরাস
পেট ব্যথা
গলা ব্যথা
মূত্রনালীর সংক্রমণ
বুকের সংক্রমণ
ফোড়া
হাড় ভাঙা
অন্য অবস্থার জন্য স্টেরয়েড ট্যাবলেট বা ইনজেকশন গ্রহণ
যেসব নারীয পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম আছে তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
Click on the youtube link for watching this video
Follow our Facebook page : Click our Facebook Chanel
Follow our Instagram page : Click our Instagram Chanel
Follow our website page :Click our website link
Comments
Post a Comment