ডিটক্স জুস খাওয়ার উপকারিতা এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডিটক্স জুস বানানোর পদ্ধতি

 আমাদের দেশে রুগীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। ছোট থেকে বড় যে কোন বয়সী লোকেরাই কোন না কোন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা যখন কোন হাসপাতালে যাই তখন আমরা অনেক ধরনের রুগী দেখতে পাই। বর্তমান যুগে প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু রোগ আছে। আমাদের শরীরের মধ্যে যে টক্সিন থাকে সেই কারণে আমাদের রোগ হয়।হজমে সমস্যা থাকলে, মলত্যাগে সমস্যা হলে, ঘাম না হলে, পরিমিত জল পান না করলে শরীরে টক্সিন জমতে শুরু করে বা টক্সিন উৎপন্ন হওয়া সহজ হয়ে যায়। এছাড়া কায়িক পরিশ্রমের অভাবেও শরীরে টক্সিন জমে। যারা শাক সবজি কম খান, জাংক ফুড বেশি খান এবং মদ বা সিগারেট পান করেন তাদের শরীরে টক্সিন উৎপন্ন হওয়ার মাত্রা বেশি হয়। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের যে কাজটি করতে হবে সেটা হল আমাদের body - কে ডিটক্স করতে হবে অর্থাৎ টক্সিন কে বাইরে বার করতে হবে। টক্সিন কে বাইরে বার করার অনেক ধরনের উপায় আছে তার মধ্যে একটি ঘরোয়া উপায় হলো Detox juice. এই জুসের মাধ্যমে টক্সিন কে বাইরে বার করা যাবে।

ডিটক্স জুস বানানোর পদ্ধতি তিন ইঞ্চির অ্যালোভেরা গাছের পাতা নিতে হবে। এই অ্যালোভেরা থেকে পাল্পটা মিক্সিতে দিয়ে দিতে হবে এবং তার মধ্যে জল দিয়ে দিতে হবে। তারপর একটি আমলা,ছয় সাতটা পুদিনার পাতা দিয়ে দিতে হবে। সবকিছুকে একসাথে মিক্সিতে ভালো করে গ্ৰাইন্ড করে নিতে হবে। এইভাবে জুসটি তৈরি করতে হবে। জুস যদি গাঢ় হয় তাহলে একটু জল দিয়ে দিতে হবে।

                                            জুস টিকে ছাকা যাবে না কারণ জুসের মধ্যে যে ফাইবার থাকে সে ফাইবার টি তাহলে চলে যাবে। নুন এবং বরফ জুসের মধ্যে দেওয়া যাবে না।

                                           প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে এই জুসটি খেতে হবে। এই জুসটি খেতে হবে ১৫ থেকে ২০ দিন। এই জুসটির কোন side effect নেই।

ডিটক্স জুস খাওয়ার উপকারিতা -  সহজভাবে বলতে গেলে ডিটক্সিফিকেশন হলো  শরীরের টক্সিন থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য অনেক উপায় এবং প্রচুর ডায়েট হয়েছে। তবে  সবচেয়ে নিরাপদ এবং সবচেয়ে সাধারণ উপায় হল প্রাকৃতিক পথ গ্রহণ করা।

 ডিটক্স ডায়েট করা কেন প্রয়োজন -  ডিটক্স ডায়েট শরীর থেকে টক্সিন অপসারণ করতে  অনেক বেশি সাহায্য করে। এটি স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে  এবং মানসিক সুস্থতারও উন্নতি করে।

 ডিটক্স জুস-এর উপকারিতা

১. মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে -  ডিটক্স জুস মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস করে ডিটক্স জুস পান করলে মানসিক স্বাস্থ্য অনেক উন্নত হবে। অনেক আয়ুর্বেদিক ডিটক্স জুস রয়েছে। সেগুলি হল -  অ্যালোভেরার জুস, আমলা জুস ,নিমের জুস, গমের ঘাসের জুস ইত্যাদি। এই  জুস গুলি প্রত্যেক দিনের ব্যবহারের জন্য অনেক বেশি কার্যকর।

২.  শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করে -  ডিটক্স জুস শুধু মানসিক স্বাস্থ্য নয় শারীরিক সুস্থতারও সাহায্য করে। Immune system -  কে শক্তিশালী রাখতে, শারীরিক তরল গুলিকে আরো ভালো করতে সাহায্য করে। ডিটক্স জুস শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। ডিটক্স জুস ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেক সহায়তা করে।

৩.  শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে -  শরীরকে সুস্থ রাখতে ডাক্তাররা প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ গ্লাস জল পান করার পরামর্শ দেন। কিন্তু ডিটক্স জুস খেলে তা শরীরকে আরও বেশি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই জুসটি পান করতে হবে।

৪.  শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে -  ডিটক্স জুস  শক্তি বাড়াতে অনেক বেশি সহায়তা করে। এই জুসটি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হবে।

৫.  ত্বক এবং চুলকে ভালো রাখতে সহায়তা করে -  আমলা জুস এবং অ্যালোভেরার জুসের মতো রস ত্বক এবং চুলের অবস্থার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিটক্স জুস ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং চুলকে শক্তিশালী করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

৬.  শরীরের PH ভারসাম্য বজায় রাখে -  এক সুস্থ শরীরে PH ব্যালেন্স থাকে। এই PH ব্যালেন্স ব্যস্ত সময়সূচী, অস্বাভাবিক ঘুমের সময় এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই ভারসাম্য বজায় রাখা শরীরকে সুস্থ করার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। ডিটক্স জুস শরীরের PH ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

Comments

Popular Posts